রাজশাহীতে এসএসসি পরীক্ষার্থীকে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় তার বাবা আকরাম হোসেনকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় মূল আসামি নান্টুসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
শনিবার (১৯ এপ্রিল) সকালে র্যাব-৫ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মাসুদ পারভেজ এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, বুধবার রাজশাহী নগরীর তালাইমারি শহীদ মিনার এলাকায় প্রধান আসামি নান্টু ও তার সহযোগীরা মিলে আকরাম হোসেনকে পিটিয়ে গুরুতর জখম করে। পরে তিনি মারা যান।
এ ঘটনার পর নিহতের পরিবার বৃহস্পতিবার বোয়ালিয়া থানায় একটি মামলা করে। মামলায় প্রধান আসামি হিসেবে নান্টুসহ বিশাল, খোকন, তাসিন, অমি, শিশির এবং নাহিদের নাম উল্লেখ করা হয়। এ ছাড়া অজ্ঞাতনামা আরও চার-পাঁচজনকেও আসামি করা হয়েছে।
ঘটনার পরপরই র্যাবের একটি আভিযানিক দল আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান শুরু করে। এরই ধারাবাহিকতায় শুক্রবার রাত ৮টার দিকে নওগাঁ সদর উপজেলার রাম রায়পুরাড়া আড়ারাপাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে মামলার প্রধান আসামি নান্টু ও ৩ নম্বর আসামি খোকন মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এর আগে গতকাল বিকেলে নান্টুর আরেক সহযোগী রুমেল (২৫) কে গ্রেপ্তার করে র্যাব। এ নিয়ে এ ঘটনায় মোট তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হলো।
র্যাব জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃতরা ঘটনার সঙ্গে তাদের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছেন। তাদের বোয়ালিয়া মডেল থানার মাধ্যমে আদালতে পাঠানো হয়েছে। মামলার বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
ঘটনার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার বিকেলে তালাইমারী শহিদ মিনার এলাকায় নিহত আকরামের মরদেহ নিয়ে মানববন্ধন করেন এলাকাবাসী। ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের সর্বস্তরের ব্যানারে আয়োজিত এই কর্মসূচি থেকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আসামিদের গ্রেপ্তার এবং তাদের ফাঁসির দাবি জানানো হয়।
আকরামের স্ত্রী মুক্তি বেগম বলেন, “ওরা আমার স্বামীকে হত্যা করেছে। আমি তাদের বিচার চাই, ওদের ফাঁসি হোক। ওরা যেন পালিয়ে যেতে না পারে। ঘটনার পরে তাদের এখনও পুলিশ গ্রেপ্তার করতে পারেনি।”
মেয়ে জানান, “তারা দীর্ঘদিন ধরে আমাকে উক্ত্যক্ত করে আসছিল। সর্বশেষ তারা আমাকে অশ্লীলভাবে গালি দেয়। আমি বিষয়টি বাবা-মাকে বললে, বাবা তাদের পরিবারকে জানাতে গিয়েছিলেন। এতেই তারা ক্ষিপ্ত হয়ে বাবাকে ঘিরে ধরে মারধর করে এবং ইট দিয়ে আঘাত করে। এতে আমার বাবা মারা যান। আমার একটাই দাবি—তাদের ফাঁসি হোক।”
তথ্যসূত্র: দৈনিক জনকণ্ঠ