শেখ হাসিনা কেন জাফলংয়ের সেই মাঠ মোদিকে দিয়েছিল

সিলেটের জাফলংয়ের সীমান্তবর্তী নলজুরী এলাকায় বৃহস্পতিবার এক উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়, যখন ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) আকস্মিকভাবে একটি মাঠ দখলের চেষ্টা চালায়। মাঠে ক্রিকেট খেলছিলেন স্থানীয় কয়েকজন যুবক। এ সময় হঠাৎই বিএসএফ সদস্যরা সীমান্ত অতিক্রম করে মাঠে ঢুকে পড়ে এবং বন্দুক তাক করে খেলোয়াড়দের সরে যেতে হুমকি দেয়।

স্থানীয়দের দাবি, তারা ভয় না পেয়ে জীবন ঝুঁকির মধ্যেও সাহসিকতার সঙ্গে মাঠ রক্ষায় রুখে দাঁড়ান। বিএসএফের আগ্রাসী ভঙ্গি সত্ত্বেও স্থানীয় যুবকরা দৃঢ় মনোবলে ভারতীয় বাহিনীকে পিছু হটাতে সক্ষম হন। তাঁদের এই প্রতিরোধ আজ এলাকাজুড়ে প্রশংসিত হচ্ছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, নলজুরী এলাকার এই মাঠটি ২০১৫ সালের সীমান্ত চুক্তির অজুহাতে ভারত নিজেদের দাবি করছে। কিন্তু এলাকাবাসীর প্রশ্ন, “যদি শেখ হাসিনা ২০১৫ সালে এই জায়গা ভারতকে দিয়ে থাকেন, তবে সেই সময়েই মাপজোক ও পিলার স্থাপন হতো। এখন ২০২৫ সালে এসে হঠাৎ করে এই জায়গা দখলের চেষ্টা কেন?” এক যুবক আরও জানান, “আমরা আমাদের দেশ, আমাদের মাঠ রক্ষার জন্য জীবনের ঝুঁকি নিয়েও তাদের প্রতিরোধ করেছি।”

জাফলংয়ের নলজুরী এলাকা প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে পরিপূর্ণ। সবুজ মাঠ, পাহাড় ও ঝরনাবেষ্টিত পরিবেশে দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় যুবকদের খেলাধুলার প্রিয় স্থান এটি। এখানকার শান্ত পরিবেশে প্রতিদিন বিকেলে ক্রিকেট খেলার আয়োজন চলে। কিন্তু বৃহস্পতিবারের এ ঘটনার পর স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।

সাম্প্রতিক সময়ে ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে ভারতীয় বাহিনীর এ ধরনের আগ্রাসী অবস্থান আরও বেশি উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। এলাকাবাসী জানান, সীমান্ত এলাকায় এমন আচরণ শুধু আন্তর্জাতিক আইন পরিপন্থী নয়, বরং সুদীর্ঘকাল ধরে বসবাসরত সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ।

স্থানীয়দের দাবি, অবিলম্বে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর নজরদারি নিশ্চিত করতে হবে এবং সরকারের উচ্চপর্যায়ের হস্তক্ষেপ জরুরি। তারা এও দাবি করেন যে, সীমান্ত চুক্তির বাস্তবায়ন কিংবা পর্যালোচনা হলে তা জনস্বার্থে স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় হওয়া উচিত, যাতে এই ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা আর না ঘটে।

তথ্যসূত্র: দৈনিক জনকণ্ঠ

Leave a Reply