বেগম খালেদা জিয়ার ফিরে আসা বিএনপিকে চাঙ্গা করবে

রাজনৈতিক বিশ্লেষক আশরাফ কায়সার সম্প্রতি এক টকশোতে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার দেশে ফিরে আসাকে বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার জন্য একটি তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, “বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক উপস্থিতি শুধু বিএনপির জন্য নয়, বরং পুরো নির্বাচনী পরিবেশ ও রাজনৈতিক প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করবে।”

আশরাফ কায়সার মনে করেন, বেগম খালেদা জিয়ার প্রত্যাবর্তনের ফলে বিএনপি সাংগঠনিকভাবে আরও শক্তিশালী হবে। সেই সঙ্গে তিনি বলেন, “সংস্কারের আলোচনা একটি ‘লিফ ফ্রগ’-এর মতো দ্রুতগতিতে এগোতে পারে।” এর অর্থ হলো, রাজনৈতিক সংস্কার নিয়ে যে ধীর গতির আলোচনা বা উদ্যোগ আগে ছিল, তা নতুন করে গতি পেতে পারে এবং সম্ভবত এক ধাপে অনেকটা অগ্রসর হতে পারে।

আশরাফ কায়সার বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে বলেন, “বর্তমান রাজনীতির সবচেয়ে বড় সংকট অপরাজনীতি।” তিনি ব্যাখ্যা করেন, “কমিটি গঠন নিয়ে কে সেক্রেটারি, কে প্রেসিডেন্ট হবে—এইগুলো রাজনীতিবিদদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। কিন্তু অপরাজনীতি হচ্ছে খুন, চাঁদাবাজি, দখলদারিত্ব—যা আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতির গভীরে ঢুকে গেছে।” তার মতে, এই অপরাজনীতির বিরুদ্ধে সংগ্রাম করাই এখন সময়ের দাবি।

২০২৪ সাল সম্পর্কে আশাবাদ ব্যক্ত করে আশরাফ কায়সার বলেন, “এই বছরটি রাজনীতিতে নতুন করে ভাবার একটি সুযোগ তৈরি করেছে। বিএনপির মতো একটি বড় দল যদি বাস্তব ভিত্তিক সংস্কারের পথে হাঁটে, তাহলে দেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে বড় পরিবর্তন আসতে পারে।”

বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসার প্রসঙ্গে আশরাফ কায়সার বলেন, “বিগত ছয় বছর ধরে তিনি চিকিৎসার জন্য যথাযথ সুযোগ পাননি। একজন প্রবীণ নেত্রীর সঙ্গে এমন আচরণ ইতিহাস মনে রাখবে এবং একদিন এর বিচার হবে।” তিনি এতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং সরকারের দায়িত্বশীল ভূমিকার কথা স্মরণ করিয়ে দেন।

আশরাফ কায়সার তারেক রহমান প্রসঙ্গেও কথা বলেন। তিনি বলেন, “তার দেশে ফেরা এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। তিনি ফিরে এলে বিএনপির সাংগঠনিক পুনর্গঠন আরও বেগ পাবে। আমি মনে করি, সঠিক নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠার জন্য তার ফিরে আসাটাও অত্যন্ত জরুরি।”

রাজনৈতিক বিশ্লেষক আশরাফ কায়সারের বক্তব্য থেকে বোঝা যায়, তিনি রাজনীতিতে গঠনমূলক পরিবর্তনের আশাবাদী। তার মতে, বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তন বিএনপি ও দেশের সামগ্রিক রাজনৈতিক প্রক্রিয়াকে একটি নতুন মোড়ে নিয়ে যেতে পারে। অপরাজনীতির বিপরীতে গঠনমূলক রাজনীতির প্রয়োজনীয়তার উপর তিনি জোর দেন এবং রাজনৈতিক সংস্কারের জন্য ২০২৪ সালকে একটি মোক্ষম সুযোগ হিসেবে দেখেন।

তথ্যসূত্র: দৈনিক জনকণ্ঠ

Leave a Reply