যাদের লাল শাক খাওয়া উচিত নয়

এই মৌসুমে বাজারে বিভিন্ন রকমের শাক পাওয়া গেলেও শীতকালের তুলনায় তার পরিমাণ কিছুটা কম। তবে বর্ষা ছাড়া প্রায় সব সময়ই বাজারে এক জনপ্রিয় শাকের দেখা মেলে—লাল শাক। অনেকের ঘরেই এই শাক নানা পদে রান্না করা হয়। ভাতে মাখলেই এর রং হয়ে যায় টুকটুকে লাল, যা শুধু রূপেই নয়, গুণেও ভরপুর।

লাল শাকে রয়েছে একাধিক ভিটামিন, আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস, কপার, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম এবং ম্যাঙ্গানিজ। এই সব পুষ্টিগুণ লাল শাককে করে তোলে হজমে সহায়ক। বদহজম থেকে শুরু করে একাধিক পেটের সমস্যা দূর করতে পারে এই শাক।

ডায়াবেটিস রোগীদের জন্যও বিশেষ উপকারী এই লাল শাক। আয়ুর্বেদ শাস্ত্র অনুযায়ী, এটি কফ ও পিত্ত দোষ দূর করতে সাহায্য করে এবং রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়ক। পাশাপাশি, হাড়ের স্বাস্থ্যের জন্যও লাল শাক অত্যন্ত উপকারী। এতে থাকা ম্যাঙ্গানিজ, ক্যালসিয়াম, জিংক, কপার এবং ম্যাগনেসিয়াম হাড় মজবুত রাখতে সাহায্য করে এবং হাড় সংক্রান্ত রোগের ঝুঁকি কমায়।

হৃদযন্ত্রের সুস্থতার ক্ষেত্রেও লাল শাকের ভূমিকা উল্লেখযোগ্য। এটি হৃদরোগের আশঙ্কা কমায় ও রক্তাল্পতা রোগেও উপকারী ভূমিকা পালন করে।

তবে এই সব উপকারিতার পাশাপাশি কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও রয়েছে লাল শাকের। বিশেষ করে যারা ইনসুলিন গ্রহণ করেন বা রক্তে শর্করার মাত্রা কমে যাওয়ার প্রবণতা আছে, তারা সাবধানে এই শাক খাবেন। কারণ, এটি ইনসুলিনের মাত্রা কমিয়ে দিতে পারে, যা হাইপোগ্লাইসেমিয়ার আশঙ্কা বাড়িয়ে দিতে পারে।

তাছাড়া, লাল শাকে প্রচুর ভিটামিন কে থাকায় যারা অ্যান্টি কোয়াগুল্যান্টস ওষুধ খান, তাদের জন্য এই শাক বিপজ্জনক হতে পারে। এতে ড্রাগ মেটাবলিজমে সমস্যা দেখা দিতে পারে।

গর্ভবতী মহিলা বা যাঁরা সন্তানকে স্তন্যপান করান, তাঁদেরও লাল শাক খাওয়া থেকে বিরত থাকা উচিত। কারণ, অতিরিক্ত ফাইবারের কারণে ডায়রিয়া, পেটে ব্যথা কিংবা জ্বরের মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাছাড়া, বেশি পরিমাণে লাল শাক খেলে উদ্ভিজ্জ খাবার থেকে আয়রন শোষণের ক্ষেত্রেও সমস্যা হতে পারে।

লাল শাক কেনার সময়ও সতর্ক থাকা দরকার। খাঁটি লাল শাক হলে ভাতে মাখার সময় তার রং হবে লাল টুকটুকে। অনেক সময় কৃত্রিমভাবে রঙ করা শাকও বাজারে বিক্রি হয়, তাই কেনার সময় সেটা ভালোভাবে দেখে নেওয়া জরুরি।

তাই এই বর্ষায় যদি লাল শাক খান, অবশ্যই খান জেনে-শুনে ও পরিমিত পরিমাণে।

তথ্যসূত্র: নিউজ ১৮

Leave a Reply